অনুচ্ছেদ “বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ”


বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বের বুকে একটি রক্তাক্ত ইতিহাস। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ নয় মাস পশ্চিম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাঙালির যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম সংঘটিত হয়, ইতিহাসে তা-ই বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ নামে পরিচিত। ৩০ লক্ষ প্রাণ আর ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত মর্যাদার এবং গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রয়েছে এক সুর্দীঘ ইতিহাস। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর পূর্ব পাকি¯তান (বর্তমান বাংলাদেশ) পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। দেশ ভাগের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা নান বৈষম্যমূলক নীতি গ্রহন করে বাঙালিকে অত্যাচার -নির্যাতন করতে থাকে। ফলে সংঘটিত হয় ‘৫২ এর ভাষা আন্দোলন,’ ৬২- এর শিক্ষা আন্দোলন,’ ৬৬-এর ছয়দফা আন্দোলন এবং’ ৬৯ এর গণঅভ্যুথান। সর্বশেষ ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয়লাভ করা সত্ত্বেও ক্ষমতা হস্তান্তরে তৎকালীন ক্ষমতাসীন প্রেসীডেন্ট ইয়াহিয়ার টালবাহানা বাঙালিকে অসহযোগ আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য করে। এর প্রেক্ষিতে১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী বাঙালির উপর ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকান্ড চালায়, যা ইতিহাসে ‘কালরাত’ নামে পরিচিত। এ নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানাতে এবং বাঙালির ন্যায্য প্রাপ্তি আদায়ে বঙ্গব›ধুর আহ্বানে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। বাংলার আপামর জনসাধারণের অংশগ্রহণে পরিচালিত হয় মুক্তিযুদ্ধ। লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করার মাধমে পশ্চিমা হানাদাররা এ দেশকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে। অবশেষে দীর্ঘ নয় মাস বাঙালির সশস্ত্র সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় । লক্ষ লক্ষ প্রাণ আর কোটি টাকার সম্পদহানির মধ্য দিয়ে পরিসমাপ্তি ঘটে মুক্তিযুদ্ধের । মুক্তিযেদ্ধে বাঙালির মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান পায় লাল-সবুজের পতাকাসমৃদ্ধ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।

অনুচ্ছেদ “আমার দেখা একটি বইমেলা”
Previus
অনুচ্ছেদ “নবান্ন উৎসব”
Next

Share This Post


Suggestion or Complain

সংবাদ শিরোনাম