পড়া মনে রাখার কিছু কৌশল জেনে নাও...


 পড়া মনে রাখার কৌশল

বেশির ভাগ শিক্ষার্থীকে বলতে শোনা যায়, ‘পড়া মনে থাকে না’ অথবা ‘যা পড়ি তা-ই ভুলে যাই। পড়া মনে না থাকা নিয়ে কম-বেশি হতাশায় ভুগে নাই এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন ব্যাপার। এই বিষয়টি নিয়ে আমাদেরকে বেশি হতাশ হওয়া উচিত না । এ জাতীয় সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাওয়া যাবে যদি আমরা কিছু কৌশল মেনে চলি। এই রকম দশটি কৌশল নিয়ে নিচে আলোচনা করা হল।

১। নিমনিক তৈরী করাঃ

আমাদের ব্রেইন আগোছালো জিনিস মনে রাখতে পারে না। তাই কোন কিছু সাজিয়ে শীট আকারে পড়লে অথবা কবিতার ছন্দ বানিয়ে পড়লে তা সহজেই মনে রাখা যায়। পড়া মনে রাখার এই কৌশল কে নিমনিক (mnemonic) বলা হয়।

২। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোঃ

গবেষণায় দেখা গেছে, পড়া মনে রাখার জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোও জরুরি। সাধারণত একজন সুস্থ ব্যক্তির দিনে ৮ ঘন্টার মত ঘুমানো উচিত। এর থেকে কম ঘুমালে পড়া মনে রাখার ক্ষমতা কমে যায়।

৩। পড়তে বসার আগে ১০ মিনিট হাঁটাঃ

পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, পড়ার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা প্রায় ১০ শতাংশ পরিমাণ বেড়ে যায়। তাহলে একটু হাঁটার পরেই শুরু হোক পড়ালেখা।

৪। বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করাঃ আমাদের ব্রেইন ক্ষণস্থায়ী স্মৃতি গুলোকে তখনই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত করে যখন তা বারবার চর্চা করা হয়। বারবার চর্চা করার ফলে ব্রেইনের স্মৃতি গঠনের স্থানে গাঠনিক পরিবর্তন হয় যা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি তৈরীতে সাহায্য করে। তাই বেশি বেশি পড়া ও অনুশীলন করা পড়া মনে বেশি থাকে। ৫। পড়ার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করাঃ

আকর্ষণীয় উপায়ে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে পড়া সহজে মনে থাকবে।যে বিষয়টি পড়ব তার প্রতি আকর্ষণ জাগাতে হবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, মানুষ কোন কিছুর প্রতি আকর্ষণ অনুভব করলে তা সহজেই মস্তিষ্কে মেমরি বা স্মৃতিতে রূপান্তরিত হয়ে যায় এবং তা স্মৃতিতে দীর্ঘস্থায়ী হয়। ৬। রঙ্গিন কলম ব্যবহার করে দাগিয়ে পড়াঃ  আমাদের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী গুরুত্বপূর্ণ লাইন দাগিয়ে পড়ে। এটাও পড়া মনে রাখতে বেশ সহযোগীতা করে। দাগিয়ে পড়ার ফলে কোন শব্দ বা বাক্যের প্রতি আকর্ষণ ও আগ্রহ বেড়ে যায়। পাশাপাশি এর উপর ব্রেইনের ভিজ্যুয়ালিটি ইফেক্টও বেড়ে যায় । যা পড়াকে মনে রাখতে খুব সহায়তা করে।

৭। লিখে লিখে পড়ার অভ্যাস করাঃ

কোন জিনিস পড়ার সাথে সাথে লিখলে পড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। কারন নিউরো বিজ্ঞানের মতে, কিছু লিখলে ব্রেইনের অধিকাংশ জায়গা উদ্দীপিত হয় এবং লেখাটিকে স্থায়ী মেমরিতে রূপান্তরিত করে ফেলে। ফলে পড়াটি মস্তিষ্কতে দীর্ঘস্থায়ী হয়। সাধারণভাবেও বুঝা যায়, বইতে যেসব বিষয় ছবি দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয় তা-ই আমাদের বেশি মনে থাকে। পরীক্ষার সময়ও চোখের সামনে বইয়ের ছবিটিই ভেসে উঠে। তাই লিখে বা ছবি এঁকে পড়া অনেক কার্যকর একটি পদ্ধতি।

৮। কনসেপ্ট ট্রি ব্যবহার করে পড়াঃ

যে কোন বিষয় পড়ার আগে অধ্যায়গুলোকে কয়েকটি অংশে ভাগ করে নিলে পড়তে সুবিধা হয়। একে একটি গাছের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। গাছটিকে একটি অধ্যায় বিবেচনা করে প্রতিটি পাতায় অংশ গুলোর একটি করে সারমর্ম লিখে পড়লে পড়া মনে রাখতে সহজ হয়। এ পদ্ধতিকে কনসেপ্ট ট্রি বলা হয়। পড়া মনে রাখতে এটি বেশ কার্যকর একটি পদ্ধতি।

৯। পড়ার জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করাঃ

আমাদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা সারাদিন-সারারাত শুধু পড়লেই পড়া বেশি মনে থাকে। ভালো ছাত্র হওয়া যায়একটি পদ্ধতি। এটা একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ সবসময় আমাদের মষ্তিষ্ক (ব্রেইন) একইভাবে কাজ করতে পারে না। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বিকালের পর আমাদের ব্রেইনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই বিকালের পরে অর্থাৎ সন্ধ্যায় বা রাতে পড়া বেশি কার্যকর হয়।

১০। যা পড়েছি তা অন্যকে শেখানোঃ

পড়া মনে রাখার জন্য প্রাচীনকাল থেকেই এ পদ্ধতিটি বেশ জনপ্রিয়। নিজে যা পড়েছি বা শিখেছি তা অন্যকে শেখানোর মাধ্যমে মস্তিষ্কে আরো ভালোভাবে গেঁথে যায়। তাছাড়া অন্যকে শেখানোর ফলে নিজের দক্ষতা প্রকাশ পায়। পড়াটি ভালভাবে আয়ত্ত হয়েছে কিনা তাও বুঝা যায়।

পরীক্ষায় ভালো করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল.....
Previus
গণিতে ভালো করার ১৩টি ম্যাজিক পদ্ধতি ! ক্লিক করে এক্ষুণি পড়.....
Next

Share This Post


Suggestion or Complain

সংবাদ শিরোনাম