সমাস (বিস্তারিত)
সমাস
‘সমাস’ শব্দের অর্থ সংক্ষেপ, মিলন, একধিক পদের একপদীকরণ। সুতরাং, অর্থ সম্বন্ধ আছে এমন একাধিক শব্দের একসঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি বড় শব্দ গঠনের প্রক্রিয়াকে সমাস বলে। যেমন- দেশের সেবা- দেশসেবা।ঋণ হতে মুক্ত- ঋণমুক্ত।
বাক্যে শব্দের ব্যবহার সংক্ষেক করার উদ্দেশ্য সমাসের সৃষ্টি। সমাসের রীতি সংস্কৃত থেকে বাংলার এসেছে। তবে খাঁটি বাংলা সমাসও অনেক রয়েছে। সেগুলোতে সংস্কৃতের নিয়ম প্রযোজ্য হয় না।
সমস্ত পদ বা সমাসবদ্ধ পদঃ সমাসের প্রক্রিয়ায় সমাসবদ্ধ বা সমাসনিষ্পন্ন পদকে সমস্ত পদ বলে। যেমন- বিলাত, হতে ফেরত = বিলাত ফেরত। এখানে ‘বিলাত ফেরত’ পদটি সমস্ত পদ বা সমাবদ্ধ পদ।
সমস্যমান পদঃ সমস্ত পদ বা সমাসবদ্ধ পদটির অন্তর্গত পদগুলোকে সমস্যমান পদ বলে। অর্থাৎ যে কয়েক পদে সমাস হয়, তাদেরকে সমস্যমান পদ বলে। যেমন- বিলাত হতে ফেরত = বিলাত ফেরত। এখানে ‘বিলাত’ ‘হতে’ ও ‘ফেরত’ পদগুলো সমস্যমান পদ।
ব্যাসবাক্যঃ সমস্ত পদকে ভেঙে সে বাক্যাংশ করা হয়, তার নাম সমাসবাক্য, ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য। যেমন- বিলাত হতে ফেরত = বিলাত ফেরত। এখানে ‘বিলাত হতে ফেরত’ হলো ব্যাসবাক্য।
পূর্বপদ ও উত্তর পদঃ সমাসযুক্ত পদের প্রথম অংশকে পূর্বপদ এবং পরবর্তী অংশকে উত্তর পদ বা পরপদ বলে। যেমন- বিলাত হতে ফেরত = বিলাত ফেরত। এখানে ‘বিলাত’ পূর্বপদ এবং ‘ফেরত’ উত্তর পদ।
সমাসের শ্রেণিবিভাগ
সমাস প্রধানত ছয় প্রকার। যেমন - দ্বন্দ¦, কর্মধারয়, তৎপুরুষ, বহুব্রীহি, দ্বিগু ও অব্যয়ীভাব সমাস। দ্বিগু সমাসকে অনেক ব্যাকরণবিদ কর্মধারয় সমাসের অন্তর্ভূক্ত করেছেন। আবার কেউ কেউ কর্মধারয়কেও তৎপুরুষ সমাসের অর্ন্তভুক্ত বলে মনে করেছেন। এদিক র্থেকে সমাস মূলত চারটি : দ্বন্দ্ব, বহুব্রীহি ও অব্যয়ীভাব।
১-দ্বন্দ্ব সমাস
যে সমাসে প্রত্যেকটি সমস্যমান পদের অর্থের প্রধান্য থাকে, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে।যেমন- ভালো ও মন্দ = ভালো-মন্দ । দোয়াত ও কলম = দোয়াত-কলম। তাল ও তমাল = তাল-তমাল। দ্বন্দ্ব সমাসে ও, আর এবং এ তিনটি অব্যয় ব্যবহৃত হয়; কিন্তু সমস্ত পদে এগুলো বিলুপ্তি ঘটে। দ্ব
ন্দ্ব সমাসে সাধারণথ অল্পস্বর বিশিষ্ট শব্দ এবং স্ত্রীবাচক শব্দ পূর্বে বসে। যেমন-লাভ, লোকসান, মাতা-পিতা, মা-বাপ ইত্যাদি।
দ্বন্দ্ব সমাস কয়েক প্রকারে সাধিত হয়। যেমন-
১. মিলনার্থক শব্দযোগে : মা-বাবা, ভাই-বোন, মাসি-পিসি, জ্বিন-পরি, চা-বিস্কুট, দুধ-সাগু ইত্যাদি।
২. বিরোধার্থক শব্দযোগে : দা-কুমড়া, অহি-নকুল, স্বর্গ-নরক ইত্যাদি।
৩. বিপরীতার্থক শব্দযোগে : আয়-ব্যয়, জমা-খরচ, ছেলে-বুড়ো, লাভ-লোকসান, ছোট-বড় ইত্যাদি।
৪. অঙ্গবাচক শব্দযোগে : হাত-পা, নাক-কান, বুক-পিঠ, মাথা-মুন্ডু, নাক-মুখ ইত্যাদি।
৫. সংখ্যাবাচক শব্দযোগে : সাত-পাঁচ, সাত-সতের, উনিশ-বিশ, নয়-ছয় ইত্যাদি।
৬. সমার্থক শব্দযোগে : হাট-বাজার, ঘর-দুয়ার, কল-কারখানা, খাতা-পত্র ইত্যাদি।
৭. প্রায় সমার্থক ও সহচর শব্দযোগে : কাপড়-চোপড়, পোকা-মাকড়, দয়া-মায়া ইত্যাদি।
৮. দুটো সর্বনামযোগে : যা-তা, যে-সে, যথা-তথা, তুমি-আমি,এখানে-সেখানে ইত্যাদি।
৯. দুটো ক্রিয়াযোগে : দেখা-শোন, যাওয়া-আসা, চলা-ফেরা, দেওয়া-থোওয়া ইত্যাদি।
১০. দুটো ক্রিয়া বিশেষণযোগে : ধীরে-সুস্থে, আগে-পাছে, আকারে-ইঙ্গিতে ইত্যাদি।
১১. দুটো বিশেষণযোগে : ভাল-মন্দ, কম-বেশি, আসল-নকল, বাকি-বকেয়া ইত্যাদি।
অলুক দ্বন্দ্বঃ যে দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান পদগুলোর বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলূক দ্বন্দ্ব বলে।
যেমন-দুধে-ভাতে, মায়ে-ঝিয়ে, হাতে-কলমে ইত্যাদি। তিন বা বহুপদের দ্বন্দ্ব সমাস হলে তাকে বহুপদী দ্বন্দ্ব সমাস বলে।
যেমন- সাহেব-বিবি-গোলাম, হাত-পা-নাক-মুখ-চোখ ইত্যাদি।
২-কর্মধারয় সমাস
যেখানে বিশেষণ বা বিশেষণভাবাপন্ন পদের সাথে বিশেষ্য বা বিশেষ্যভাবাপন্ন পদের সমাস হয় এবং পরপদের অর্থটি প্রধাণরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে কর্মধারয় সমাস বলে।যেমন- নীল যে পদ্মা = নীলপদ্মা।
যে শান্ত সেই শিষ্ট = শান্তশীষ্ট।
যা কাঁচা তা-ই মিঠা = কাঁচামিঠা।
নীল যে আকাশ = নীলাকাশ।
রক্ত যে কমল = রক্তকমল।
কর্মধারয় সমাস কয়েক প্রকারে সাধিত হয়। যেমন-
ক. দুটি বিশেষণ পদে একটি বিশেষ্যকে বোঝালে। যেমন- যে চালাক সেই চতুর= চালাক-চতুর।
খ. দুটি বিশেষণ পদে একই ব্যক্তি বা বস্তুকে বোঝালে। যেমন- যিনি জজ তিনিই সাহেব = জজ সাহেব।
গ. কার্যে পরস্পরা বোঝাতে দুটি কৃদন্ত বিশেষণ পদেও কর্মধারয় সমাস হয়। যেমন- আগে ধোয়া পরে মোছা = ধোয়ামোছা।
ঘ. পূর্বপদে স্ত্রীবাচক বিশেষণ থাকলে কর্মধারায় সমাসে সেটি পুরুষবাচক হয়। যেমন- সুন্দরী যে লতা = সুন্দরলতা, সহতী যে কীর্তি = মহাকীর্তি।
ঙ. বিশেষণবাচক সমহান বা মহৎ শব্দ পূর্বপদ হলে, ‘মহৎ’ ও ‘মহান’ স্থানে ‘মাহ’ হয়। যেমন- মহৎ যে জ্ঞান = মহাজ্ঞান, মহান যে নবি = মহানবি।
চ. পূর্বপদে ‘কু’ বিশেষণ থাকলে এবং পরপদের প্রথমে স্বরধ্বনি থাকলে ‘কু’ স্থানে ‘কৎ’ হয়। যেমন- কু যে অর্থ = কদর্থ, কু যে আচার = কদাচার।
ছ. পরপদে ‘রাজা’ শব্দ থাকলে কর্মধারায় সমাসে ‘রাজ’ হয় যেমন- মহান যে রাজা = মহারাজ।
জ. বিশেষণ ও বিশেষ্য পদে কর্মধারয় সমাস হলে কখনো বিশেষণ পরে আসে, বিশেষ্য আগে যায়। যেমন- সিদ্ধ যে আলু = আলুসিদ্ধ। অধম যে নর = নরাধম। কর্মধারায় সমাসের প্রকারভেদ
১. মধ্যপদলোপী কর্মধারায়ঃ ব্যাসবাক্যের মধ্যপদ লেঅপ হয়ে যে কর্মধারয় সমাস হয়, তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন- সিংহ চিহ্নিত আসন = সিংহাসন পল (মাংস) মিশ্রিত অন্ন = পলান্ন সাহিত্য বিষয়ক সভা = সাহিত্যসভা স্মৃতি রক্ষার্থে সৌধ = স্মৃতিসৌধ জীবননাশের আশঙ্কায় যে বীমা = জীবনবীমা ঘরে আশ্রিত জামাই = ঘরজামাই।
২. উপমান কর্মধারায় সমাসঃ উপমান অর্থ তুলনীয় বস্তু। সাধারণ র্ধমবাচক পদের সাথে উপমানবাচক পদের যে সমাস হয়, তাকে উপমান কর্মধারায় সমাস বলে। যেমন-
মিশির মােত কালে = মিশকালো তুষারের ন্যায় ধবল = তুষারধবল কুসুমের ন্যায় কোমল = কুসুমকোমল বজ্রের ন্যায় কন্ঠ = বজ্রকন্ঠ শশের ন্যায় ব্যস্ত = শশব্যস্ত অনুণের ন্যায় রাঙ = অরুণরাঙা গজের (হাতির) ন্যায় মূর্খ = গজমূর্খ।
[ Note: যার সাথে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে তুলনা করা হয়, তাকে উপমার এবং যাকে তুলনা করা হয়, তাকে উপমেয়, বলে। যে বিশেষ গুণ বা বৈশিষ্ট্যের জন্য তুলনা করা হয়, তাকে সাধারণ ধম্র্ বলে। যেমন- রহিম করিমের ন্যায় জ্ঞানী। এখানে রহিমকে করিমের সাতে তুলনা করা হয়েছে। তাই ‘করিম’ উপমান পদ এবং ‘রহিম’ উপমেয় পদ। বিশেষ গুণ ‘জ্ঞানী’ হল সাধারণ ধম্র্। ]
৩. উপমিত কর্মধারায় সমাসঃ উপমান পদের সাথে উপমেয় পদের যে সমাস হয় এবং যাতে সাধারণ ধর্মের উল্লেখ থাকে না, তাকে উপমিত কর্মধারায় সমাস বলে। যেমন-
মুখ চন্দ্রের ন্যায় = মুখচন্দ্র পুরুষ সিংহের ন্যায় = পুরুষসিংহ চরণ কমলের ন্যায় = চরণকমল বাহু লতার ন্যায় = বাহুলতা কর পল্লবের ন্যায় = করপল্লব।
৪. রূপক কর্মধারয় সমাসঃ উপমান ও উপমেয় পদের মধ্যে অভিন্ন কল্পনা কর হলে সে সমাস হয়, তাকে রূপক কর্মধারায় সমাস বলে। যেমন-
বিষাদ রূপ সিন্ধু = বিষাদসিন্ধু ক্রোধ রূপ অনল = ক্রোধানল মন রূপ মাঝি = মনমাঝি প্রাণ রূপ পাখি = প্রাণপাখি
৩. তৎপুরুষ সমাস
পূর্বপদের বিভক্তি লোপ হয়ে সে সমাস হয় এবং যাতে পরপদের অর্থই প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন-বিপদকে আপন্ন = বিপদাপন্ন দুঃখকে প্রাপ্ত = দুঃখপ্রাপ্ত গাছে পাকা = গাছপাকা ইত্যাদি। তৎপুরুষ সমাসে প্রকারভেদ তৎপুরুষ সমাস নয় প্রকার। যথা-
১. দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাসঃ পূর্বপদে দ্বিতীয়া বিভক্তির (কে, রে) লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- কলাকে বেচা = কলাবেচা, রথাকে দেখা = রথদেখা। ব্যাপ্তি অর্থেও দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস হয়।যেমন- চিরকাল ব্যপিয়া সুখ = চিরসুখ। এরূপ গা-ঢাকা , রথদেখা, বীজবোনা, ভাতরাঁধা, ছেলে-ভুলানো, নভেল-পড় ইত্যাদি।
২. তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাসঃ পূর্বপদে তৃতীয়া বিভক্তির (দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক) লোপ হয়ে সে সমাস হয়, তাকে তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- মন দিয়ে গড়া = মনগড়া, শ্রম দ্বারা লব্ধ = শ্রমলব্ধ, পাঁচ দ্বারা কম = পাচঁকম ইত্যাদি। ঊন, হীন, শূন্য প্রভৃতি শব্দ উত্তরপদ হলেও তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস হয় । যথা- এক দ্বারা ঊন = একোন; বিদ্যা দ্বারা হীন = বিদ্যাহীন; জ্ঞান দ্বারা বা জ্ঞানের শূন্য = জ্ঞানশূন্য; পাঁচ দ্বারা কম = পাচঁ কম (একশ) ক. উপকরণবাচক বিশেষ্য পদ পূর্বপদে বসলেও তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন- স্বর্ণ দ্বারা মন্ডিতহ = স্বর্ণমন্ডিত। এরূপ-হীরকখর্চিত, রত্নশোভিত ইত্যাদি।
খ. পূর্বপদের তৃতীয়া বিভক্তির লোপ না হলে অলূক তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন- তেলে ভাজা = তেলেভাজা, কলে ছাঁটা = কলেছাঁটা। এরূপ তাঁতেবোনা, মায়েখোদনো, পোকায়কাটা, হাতেকাটা ইত্যাদি।
৩. চতুর্থী তৎপুরুষ সমাসঃ পূর্বপদে চতুর্থী বিভক্তি (কে, এর জন্য, এর নিমিত্ত, এ তরে) লোপ হয় যে সমাস হয়, তাকে চতুর্থী তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন-
গুরুকে ভক্তি = গুরুভক্তি আরামের জন্য কেদারা = আরামকেদারা, বিয়ের জন্য পাগল = বিয়েপাগল, বালিকাদের জন্য বিদ্যালয় = বালিকা বিদ্যালয়, বসতের নিমিত্ত বাড়ি = বসতবাড়ি। এরূফ ছাত্রাবাস, ডাকমাশুল, চোষকাগজ, শিশুমঙ্গল, মুসাফিরখানা, হজযাত্রা, মালগুদাম, রান্নাঘর, মাপকাঠি, মেয়েস্কুল, পাগলাগারদ ইত্যাদি।
৪. পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাসঃ পূর্বপদে পঞ্চমী বিভক্তি (হতে , থেকে) লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন-
বিলাত থেকে ফেরত = বিলাত ফেরত, ঋণ হতে মুক্ত = ঋণমুক্ত, বোঁটা থেকে খসা = বোঁটাখসা। সাধারণথ চ্যুত, জাত, আগত, ভীত, গৃহীত, বিরত, মুক্ত, উর্ত্তীণ, পালানো, ভ্রষ্ট ইত্যাদি পরপদের সঙ্গে পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন- স্কুল থেকে পালানে = স্কুলপালানো, জেল থেকে মুক্ত = জেলমুক্ত ইত্যাদি। কোনো কোনো সময় পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাসের ব্যাববাক্যে এর ,চেয়ে ইত্যদি অনুসর্গের ব্যবহার হয়। যেমন- পরাণের চেয়ে প্রিয় = পরাণপ্রিয়।
৫. ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাসঃ পূর্বপদে ষষ্ঠী বিভক্তি (র,এর) লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- রান্নার ঘর = রান্নাঘর, চায়ের বাগান = চা-বাগান, খেয়ার ঘাট = খেয়াঘাট। এরূপ ছাত্রসমাজ, দেশসেবা, দিল্লীশ্বর, বাঁদরনাচ, পাটক্ষেত ছবিঘর, ঘোড়দৌড়, শ্বশুরবাড়ি, বিড়ালছানা ইত্যাদি।
ক. ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাসে ‘রাজা’ স্থলে ‘রাজ’, পিতা , মাতা, ভ্রাতা স্থলে যথাক্রমে ‘পিতৃ’ , ‘ভ্রাতৃ’, হয়। যেমন- গজনীয় রাজা = গজীনরাজ, রাজার পুত্র = রাজপুত্র পিতার ধন = পিতৃধন, মাতার সেবা = মাতৃসেবা, ভ্রাতার স্নেহ = ভ্রাতৃস্নেহ
খ. পরপদে সহ, তুল্য নিভ, প্রায়, সহ, প্রতিয়-এসব শব্দ থাকলেও ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন- পত্নীর সহ = পত্নীসহ, কন্যার সহ = কন্যাসহ, সহোদরের প্রতিম = সহোদরপ্রতিম/সোদরপ্রতিম ইত্যাদি।
গ. কালের কোনো অংশবোধক শব্দ করে থাকলে তা পূর্বে বসে। যথা- অহ্নের (দিনের) পূর্বভাগ = পূর্বহ্ন
ঘ. পরপদে রাজি, গ্রাম, বৃন্দ, গণ, র্যূথ প্রভৃতি সমষ্টিবাচক শব্দ থাকলে ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস হয়। যথা- ছাত্রের বৃন্দ = ছাত্রবৃন্দ, গুণের গ্রাম = গুণগ্রাম, হস্তীর যূথ = হস্তীযূথ ইত্যাদি।
ঙ. অর্ধ শব্দ পরপদ হলে সমস্তপদে তা পূর্বপদ হয়। যেমন- পথের অর্ধ = অর্ধপথ।
চ. শিশু, দুগ্ধ ইত্যাদি শব্দ পরে থাকলে সমস্তপদে তা আগে আসে। যেমন- মৃগীর শিশু = মৃগশিশু ছাগীর দুগ্ধ = ছাগদুগ্ধ ইত্যাদি।
ছ. ব্যাসবাক্যে ‘রাজা’ শব্দ পরে থাকলে সমস্তপদে তা আগে আসে। যেমন- পথের রাজা = রাজপথ, হাঁসের রাজা = রাজহাঁস। অলূক ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস ঃ ঘোড়ার ডিম, মাটির মানুষ, হাতের পাঁচ, মামার বাড়ি. সাপের পা, মনের মানুষ, কলের গান ইত্যাদি। কিন্তু ভ্রাতার পুত্র = ভ্রাতুষ্পুত্র (নিপাতনে সিদ্ধ)।
৬. সপ্তমী তৎপুরুষ সমাসঃ পূর্বপদে সপ্তমী বিভক্তি (তে, এ, য়) লোপ হয়ে যে সমাস হয়, তাকে সপ্তমী তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- গাছে পাকা = গাছপাকা রাতে কানা = রাতকানা অকালে মৃত্যু = অকালমৃত্যু এরূপ দিবানিদ্রা, বাকপটু, গোলাভরা, তালকানা, বিশ্ববিখ্যাত, ভোজনপটু, দানবীর, বাক্সবন্ধি, বস্তাপচা, মনপরা, ইত্যাদি। সপ্তমী তৎপুরুষ সমাসে কোনো কোনো সময় ব্যাসবাক্যে পরপদ সমস্ত পদের পূর্বে আসে। যেমন- পূর্বে ভূত = ভূতপূর্ব, পূর্বে অশ্রুত = অশ্রুতপূর্ব, পূর্বে অদৃষ্ট = অদৃষ্টপূর্ব ইত্যাদি।
৭. নঞ্ তৎপুরুষ সমাসঃ না-বাচক নঞ্ অব্যয় ( ন, নেই/নাই, নয় ) পূর্বে বসে যে তৎপুরুষ সমাস হয়, তাকে নঞ্ তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- ন ভাব = অভাব ন সুখ = অসুখ ন কাল = আকাল এরূপ অনাচার, অকাতর, অনাদর, নাতিদীর্ঘ, নাতিখর্ব, বেতাল, আধোয়া, নামঞ্জুর, অকেজো, অজানা, অচেনা, আলুনি, নাছোড়, অনাবাদী, নাবালক, অব্শ্বিাস, অলৌকিক, অকেশা, অসুর, অকাল, অঘাট, অমানুষ, অসঙ্গত, অভদ্র, অনন্য, অগম্য ইত্যাদি।
৮. উপপদ তৎপুরুষ সমাসঃ কৃদন্ত পদের সঙ্গে উপপদের যে সমাস হয়, তাকে উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- জলে চরে যা = জলচর জল দেয় যে = জলদ ধামা ধরে যে = ধামাধরা ছেলে ধরে যে = ছেলেধরা পকেট মারে যে = পকেটমার পঙ্কে জন্মে যা = পঙ্কাজ এরূপ গৃহস্থ, সত্যবাদী, ইন্দ্রজিং, হাড়ভাঙ্গা, মাছিমারা, ছারপোকা, ঘরপোড়া, র্বণচোরা, গলাকাটা, পা-চাটা, পাড়াবেড়ানি, ছা-পোষা ইত্যাদি।
৯. অলুক তৎপুরুষ সমাসঃ যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের দ্বিতীয়া বিভক্তি লোপ হয় না, তাকে অলুক তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- গায়ে পড় = গায়েপড়া, ঘিরে ভাজা = ঘিয়েভাজা, কলের গান = কলের গান, গরুর গাড়ি = গরুর গাড়ি ইত্যাদি
৪. বহুব্রীহি সমাস
যে সমাসে সমস্যমান পদগুলো কোনটির অর্থ না বুঝিয়ে অন্য কোনো বুঝায়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন- দশ আনন যার = দশানন। এখানে ‘দশ’ ও ‘আনন’ এ দুই পদে সমাস হয়ে ‘দশানন’ সমস্ত পদটি হয়েছে। কিন্তু ‘দশানন’ পদটি ‘দশ’ ও ‘আনন’ সমস্যমান পদগুলো কোনটির অর্থ না বুঝিয়ে দশ আনন (হাত) বিশিষ্ট ব্যক্তিতে বুঝাচ্ছে।ক. বহুব্রীহি সমাসে সাধারণত যার, যাতে ইত্যাদি শব্দ ব্যাসবাক্যরূপে ব্যবহৃত হয়। যথা- আয়ত লোচন যার = আয়তলোচনা (স্ত্রী) মহান আত্মা যার = মহাত্মা স্বচ্ছ সলিল যার = স্বচ্ছসলিলা, নীল বসন যার = নীলবসান, স্থির প্রতিজ্ঞা যার = স্থিরপ্রতিজ্ঞ ধীর বুদ্ধি যার = ধীরবুদ্ধি।
খ. ‘সহ’ কিংবা ‘সহিত’ শব্দের সঙ্গে অন্য পদের বহুব্রীহি সমাস হলে ‘সহ’ ও ‘সহিত’ এর স্থলে ‘স’ হয়। যেমন- বাদ্ধবসহ বর্তমান = সবান্ধব, সহ উদর যার = সহোদর / সোদর। এরূপ সজল, সফল, সদর্প, সলজ্জ সকল্যাণ ইত্যাদি।
গ. বহুদ্রীহি সমাসে পরপদে মাতৃ, পত্নী, পুত্র, স্ত্রী ইত্যাদি শব্দ থাকলে এ শব্দ গুলোর সঙ্গে ‘ক’ যুক্ত হয়। যেমন- নদী মাতা (মাতৃ) যার = নদীমাতৃক, বি (বিগত) হয়েছে পত্নী যার = বিপত্নীক।
ঘ. বহুদ্রীহি সমাসে সমস্তপদে ‘অক্ষি’ শব্দের স্থলে ‘অক্ষ’ এবং ‘নাতি’ শব্দ স্থলে ‘নাভ’ হয়। যেমন- কমলেল ন্যায় অক্ষি যার = কমলাক্ষ, পদ্ম নাভিতে যার = পদ্মনাভ। এরূপ ঊর্ণনাভ।
ঙ. বহুব্রীহি সমাসে পরপদে ‘জায়া’ শব্দ স্থানে ‘জানি’ হয় এবং পূর্বপদের ক্ছিু পরিবর্তন হয়। যেমন – যুবতী জায়া যার = যুবজানি (যুবতী স্থলে ‘যুব’ এবং ‘জায়া’ স্থলে ‘জানি’ হয়েছে)।
চ. বহুব্রীহি সমাসে পরপদের ‘চূড়া’ শব্দ সমস্তপদে’ ‘চুড়া’ এবং ‘কর্ম’ শব্দ সমস্তপদে ‘কর্মা’ হয়। যেমন- চন্দ্র চূড়া যার = চন্দ্রচূড় বিচিত্র কর্ম যার = বিচিত্রকর্মা
ছ. বহুব্রীহি সমাসে ‘সমাস’ শব্দের স্থানে ‘স’ এবং ‘সহ’ হয়। যেমন- সমান কর্মী যে = সহকর্মী সমান বর্ণ যার = সমর্বণ সমান উদর যাদের = সহোদর।
জ. বহুব্রীহি সমাসে পরপদে ‘গন্ধ’ শব্দ স্থানে ‘গন্ধি’ বা ‘গন্ধা’ হয়। যথা
সুগন্ধ যার = সুগন্ধি, পদ্মের ন্যায় গন্ধ যার = পদ্মগন্ধি, মৎস্যের ন্যায় গন্ধ যার = মৎস্যগন্ধা। বহুব্রীহি সমাসের প্রকারভেদ বহুব্রীহি সমাস আট প্রকার। যথা-
১. সমানধিকরণ বহুব্রীহিঃ পূর্বপদ বিশেষণ ও পরপদ বিশেষ্য হলে সমানধিকরণ বহুব্রীহি সমান হয়। যেমন-
হত হয়েছে শ্রী যার = হতশ্রী, খোশ মেজাজ, যার = খোশমেজাজ, এরকম হৃতসর্বস্ব, উচ্চশির পীতাম্বর, নীলকন্ঠ, জবরদস্তি, সুশীল, সুশ্রী, বদবখ্ত, কমবখ্ত ইত্যাদি।
২। ব্যাধিকরণ বহুব্রীহিঃ বহুব্রীহি সমাসের পূর্বেপদ এবং পরপদ কোনোটিই যদি বিশেষণ না হয় তবে তাকে বলে ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি। যথা-
আশীতে (দাঁতে) বিষ যার = আশীবিষ, কথা সর্বস্ব যার = কথাসর্বস্ব পরপদ কৃদন্ত বিশেষণ হলেও ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি সমাস হয়। যেমন- দুই কান কাটা যার = দু‘কানকাটা, বোঁটা খসেছে যার = বোটাঁখসা। অনুরূপ : ছা-পোষা, পা-চাটা, পাতা-চাটা, পাতাছেঁড়া ধামাধরা ইত্যাদি।
৩. ব্যতিহার বহুব্রীহিঃ পরস্পরের মধ্যে একই ধরণের ক্রিয়া বুঝাতে ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস হয়। যেমন- কানে কানে যে কথা = কানাকানি হাতে হাতে যে লড়াই = হাতাহাতি লাঠিতে লাঠিতে যে যুদ্ধ = লাঠালাঠি।
৪. নঞ্ বহুব্রীহিঃ পূর্বপদে নঞ্ (ন,নয়,নেই) অব্যয় থেকে যে বহুব্রীহি সমাস হয়, তাকে নঞ্ বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন- নেই বুঝ যার = অবুঝ ন (নাই) জ্ঞান যার = অজ্ঞান। এরূপ অজানা, বেতার, নাহক, নরুপায়, অকেজো, নির্ভুল, বেহুশ অনন্ত ইত্যাদি। ৫. মধ্যপদলোপী বহুব্রীহিঃ মধ্যপদ লোপ হয়ে যে বহুব্রীহি সমাস হয়, তাকে মধ্য পদলোপী বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন-
গায়ে হলুদ দেওয়া হয় যে অনুষ্ঠানে = গায়েহলুদ হাতে খড়ি দেওয়া হয় যে অনুষ্ঠানে = হাতে খড়ি বিড়ালের চোখের ন্যায় চোখ যে নারীর = বিড়ালচোখী
৬. প্রত্যয়ান্ত বহুব্রীহিঃ যে বহুব্রীহি সমাসের সমস্তপদে আ, এ, ও ইত্যাদি প্রত্যয় যুক্ত হয় তাকে বলা হয় প্রত্যয়ান্ত বহুব্রীহি। যথা-
একদিকে চোখ (দৃষ্টি) যার = একচোখা (চোখ+আ), ঘরের দিকে মুখ যার = ঘরমুখো (মুখ+ও) নিঃ (নেই) খরচ যার = নি-খরচে (খরচ+এ)। এরূপ দোটানা, দোমনা, একগুয়ে, অকেজো, একঘরে, দোনলা, দোতলা, ঊনপাঁজুরে ইত্যাদি। ৭. অলুক বহুব্রীহিঃ যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্ব বা পরপদের কোনো পরিবর্তন হয় না তাকে অলুক বহ্রব্রীহি বলে। অলুক বহুব্রীহি সমাসে সমস্ত পদটি বিশেষণ হয়। যথা-
মাথায় পাগড়ি যার = মাথায় পাগড়ি, গলায় গামছা যার = গলায় গামছা (লোকটি)। এরূপ : হাতে-ছড়ি, কানে-কলম, গায়ে-পড়া, হাতে-বেড়ি, মাথায়-ছাতা, মুখে-ভাত, কানে-খাটো ইত্যাদি।
৮. সংখ্যাবাচক বহুব্রীহিঃ পূর্বপদ সংখ্যাবাচক এবং পরপদ বিশেষ্য হলে এবং সমস্তপদটি বিশেষণ বোঝালে তাকে সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি বলা হয়। এ সমাসে সমস্তপদে আ, ই, বা, ঈ যুক্ত হয়। যথা-
দশ গজ পরিমাণ যার = দশগজি, চৌ (চার) চাল যে ঘরের = চৌচালা। কিন্তু সে (তিন) তার (যে যন্ত্রের)= সেতার (বিশেষ্য)। নিপাতনে সিদ্ধ (কোনো নিয়মের অধীনে নয়) বহুব্রীহি। দুদিকে অপ যার = দ্বীপ, অন্তর্গত অপ যার = অন্তরীপ, নরাকারের পশু যে = নরপশু, জীবিত থেকেও যে মৃত = জীবন্মৃতহ, পন্ডিত হয়েও যে মূর্খ = পন্ডিতমূর্খ ইত্যাদি।
৫. দ্বিগু সমাস
সমাহার (সমষ্টি) বা মিলন অর্থে সংখ্যাবাচক শব্দের সঙ্গে বিশেষ্য পদের যে সমাস হয়, তাকে দ্বিগু সমাস বলে। দ্বিগু সমাস কখনো কখনো অ-কারান্ত হলে আ-কারান্ত বা ই-কারান্ত হয় এবং সমাসনিষ্পন্ন পদটি বিশেষ্য পদ হয়। যেমন-পঞ্চবটের সমাহার = পঞ্চবটি নবরত্নের সমাহার = নবরত্ন ত্রি পদের সমাহার = ত্রিপদী পঞ্চনদীন সমাহার = পঞ্চনদ ত্রিফলের সমাহার = ত্রিফলা তিনপ্রান্তের সমাহার = তেপান্তর ইত্যাদি।
এরূফ ত্রিকাল, চৌরস্তা, তেমাথা, অষ্টধাতু, চর্তুরঙ্গ, ত্রিমোহিনী, তেরনদী, পঞ্চভ’ত, সাতসমুদ্র, শতাব্দী ইত্যাদি।
৬- অব্যয়ীভাব সমাস
পূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয়েরই অর্থেল প্রাধান্য থাকে, তবে তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে। যেমন-ভাতের অভাবে = হাভাত, মরণ পর্যন্ত = আমরণ. কূলের সমীপে = উপকূল। অব্যয়ীভাব সমাসে অব্যয় পদটি সামীপ্য (নৈকট্য), বীপ্সা (পৌনঃপুনিকতা), অভাব, অতিক্রম, পশ্চাৎ, সাদৃশ্য, যোগ্যতা, পর্যন্ত ইত্যাদি অৃের্থ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সামীপ্য [উপ] : কন্ঠের সমীপে = উপকন্ঠ,
বীপ্সা [পুনঃপুঃ] : দিন দিন = প্রতিদিন, ক্ষণ ক্ষণ = অনুক্ষণ।
অভাব : আমিষের অভাব = নিরামিষ, মিলের অভাব = গরমিল, হায়ার (লজ্জার) অভাব = বেহায়া।
অনতিক্রম : শক্তিকে অতিক্রম না করে = যথাশক্তি, সাধ্যকে অতিক্রম না করে = যথাসাধ্য, রীতিকে অতিক্রম না করে = যথারীতি পশ্চাৎ : পশ্চাৎ গমন = অগুগমন।
সাদৃশ্য : বনের সদৃশ = উপবন, শহরের সদৃশ = উপশহর, কথার সদৃশ = উপকথা, জেলার সদৃশ = উপজেলা। পর্যন্ত : সমুদ্র পর্যন্ত = আসমুদ্র, জীবন পর্যন্ত = আজীবন।
অতিক্রান্ত : বেলাকে অতিক্রান্ত = উদ্বেল, শৃঙ্খলাকে অতিক্রান্ত = উচ্ছৃঙ্খল।
ঈষৎ : ঈষৎ নত = আনত, ঈষৎ রক্তিম = আরক্তিম। বিরোধ : বিরুদ্ধ বাদ = প্রতিবাধ, বিরুদ্ধ কূল = প্রতিকূল। দূরবর্তী অর্থে : অক্ষির অগোচরে = পরোক্ষ।
ক্ষুদ্র অর্থে (উপ) : উপগ্রহ, উপনদী।
পূর্ণ অর্থে (উপ) : পরিপূর্ণ, সম্পূর্ণ।
প্রতিনিধি অর্থে (প্রতি) : প্রতিচ্ছায়া, প্রতিচ্ছবি, প্রতিবিম্ব।
প্রতিদ্বন্দ্বী অর্থে (প্রতি) : প্রতিচ্ছায়া, প্রতিচ্ছবি, প্রতিবিম্ব। প্রতিদ্বন্দ্বী অর্থে (প্রতি) : প্রতিপক্ষ, প্রত্যুত্তর।
অন্যান্য সমাস ওপরের ছয়টি প্রধান সমাস ছাড়াও কয়েকটি অপ্রধান সমাস রয়েছে। যেমন-
১. প্রাদি সমাস : প্র, পরা ইত্যাদি উপসর্গ পূর্বে থেকে যে সমাস হয়, তাকে প্রাদি সমাস বলে। যেমন-
প্র (প্রকৃষ্ট) যে বচন = প্রবচন প্র (প্রকৃষ্টরূপে) যে ভাত (আলোকিত) = প্রভাত পরি (চতুর্দিকে) যে ভ্রমণ = পরিভ্রমণ।
২. নিত্য সমাস : যে সমাসে সমস্যবান পদগুলো নিত্য সমাসবদ্ধ থাকে, ব্যাসবাক্যের দরকার হয় না, তাকে নিত্য সমাস বলে। যেমন-
অন্য গ্রাম = গ্রামান্তর অন্য গৃহ = গৃহান্তর কেবল দর্শন = দর্শনমাত্র দুই এবং নব্বই = বিরানব্বই আমি, তুমি ও সে = আমরা।
Share This Post