দ্বন্দ্ব সমাস - বাংলা ব্যাকরণ


দ্বন্দ্ব সমাস

যে সমাসে প্রত্যেকটি সমস্যমান পদের অর্থের প্রধান্য থাকে, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে।

যেমন- ভালো ও মন্দ = ভালো-মন্দ । দোয়াত ও কলম = দোয়াত-কলম। তাল ও তমাল = তাল-তমাল। দ্বন্দ্ব সমাসে ও, আর এবং এ তিনটি অব্যয় ব্যবহৃত হয়; কিন্তু সমস্ত পদে এগুলো বিলুপ্তি ঘটে।

দ্বন্দ্ব সমাসে সাধারণথ অল্পস্বর বিশিষ্ট শব্দ এবং স্ত্রীবাচক শব্দ পূর্বে বসে।

যেমন-লাভ, লোকসান, মাতা-পিতা, মা-বাপ ইত্যাদি।

দ্বন্দ্ব সমাস কয়েক প্রকারে সাধিত হয়। যেমন-

১. মিলনার্থক শব্দযোগে : মা-বাবা, ভাই-বোন, মাসি-পিসি, জ্বিন-পরি, চা-বিস্কুট, দুধ-সাগু ইত্যাদি।

২. বিরোধার্থক শব্দযোগে : দা-কুমড়া, অহি-নকুল, স্বর্গ-নরক ইত্যাদি।

৩. বিপরীতার্থক শব্দযোগে : আয়-ব্যয়, জমা-খরচ, ছেলে-বুড়ো, লাভ-লোকসান, ছোট-বড় ইত্যাদি।

৪. অঙ্গবাচক শব্দযোগে : হাত-পা, নাক-কান, বুক-পিঠ, মাথা-মুন্ডু, নাক-মুখ ইত্যাদি।

৫. সংখ্যাবাচক শব্দযোগে : সাত-পাঁচ, সাত-সতের, উনিশ-বিশ, নয়-ছয় ইত্যাদি।

৬. সমার্থক শব্দযোগে : হাট-বাজার, ঘর-দুয়ার, কল-কারখানা, খাতা-পত্র ইত্যাদি।

৭. প্রায় সমার্থক ও সহচর শব্দযোগে : কাপড়-চোপড়, পোকা-মাকড়, দয়া-মায়া ইত্যাদি।

৮. দুটো সর্বনামযোগে : যা-তা, যে-সে, যথা-তথা, তুমি-আমি,এখানে-সেখানে ইত্যাদি।

৯. দুটো ক্রিয়াযোগে : দেখা-শোন, যাওয়া-আসা, চলা-ফেরা, দেওয়া-থোওয়া ইত্যাদি।

১০. দুটো ক্রিয়া বিশেষণযোগে : ধীরে-সুস্থে, আগে-পাছে, আকারে-ইঙ্গিতে ইত্যাদি।

১১. দুটো বিশেষণযোগে : ভাল-মন্দ, কম-বেশি, আসল-নকল, বাকি-বকেয়া ইত্যাদি।

অলুক দ্বন্দ্বঃ  যে দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান পদগুলোর বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলূক দ্বন্দ্ব বলে।

যেমন-দুধে-ভাতে, মায়ে-ঝিয়ে, হাতে-কলমে ইত্যাদি। তিন বা বহুপদের দ্বন্দ্ব সমাস হলে তাকে বহুপদী দ্বন্দ্ব সমাস বলে।

যেমন- সাহেব-বিবি-গোলাম, হাত-পা-নাক-মুখ-চোখ ইত্যাদি।

কর্মধারয় সমাস - বিস্তারিত আলোচনা
Previus
সমাস- প্রাথমিক আলোচনা (বাংলা ব্যাকরণ)
Next

Share This Post


Suggestion or Complain

সংবাদ শিরোনাম