একটি শীতের সকাল - অনুচ্ছেদ


শীতের একটি সকাল

আমাদের দেশে পৌষ ও মাঘ এ দুই মাসে শীতকাল। এ সময় কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে শীত আসে তার নিজস্ব রূপ ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে। এমনি এক শীতে একবার গ্রামে নানাবাড়িতে যাই। খুব ভোরে আামাকে ঘুম থেকে ডাকা হয়। কনকনে শীত। লেপের আরাম ছেড়ে উঠতে কিছুতেই মন চাচ্ছিল না। কিন্তু নানাভাইয়ের মুখে খেজুরের রসের কথা শুনে মুহুর্তেই উঠে বসলাম। নানার হাত থেকে গ্লাস নিয়ে এক ঢোকে পুরোটুকুই খেয়ে ফেললাম। বেশ ভালো লাগল। ঘর থেকে বেরিয়ে উঠানে একপাশে নানিজান চুলায় ভাপা পিঠা বানাচ্ছেন। সেখানে পিঁড়িতে বসে মজা করে গরম গরম পিঠা খেলাম। তারপর মামাতো ভাই কাজলের সাথে ঘুরতে বের হলাম দেখলাম কৃষকরা লাঙল ও গরু নিয়ে মাঠে যাচ্ছে। ততক্ষণে চারদিকে একটু ফর্সা হয়ে উঠেছে। দেখলাম অনেক নারী-পুরুষ সাধারণ ও জীর্ণ - শীর্ণ কাপড় পরে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। অনেকের গায়ে আবার তা-ও নেই। বুঝতে পারলাম, শীত নিবারণের জন্য ভালো কাপড়-চোপড় কেনার সামর্থ্য নেই তাদের। শীত অনেকের জীবনে আশীর্বাদ হলেও গরিব ও অসহায়দের জীবনে তা যে অভিশাপস্বরূপ আজ তা আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একটু সামনে এগুতেই দেখি কিছু লোক খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছে। সেখানে গিয়ে তাদের সাথে যোগ দিয়ে আগুনে হাত- পা কিছুটা গরম করে নিই। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশা কেটে গেল। দেখলাম, কর্মব্যস্ত মানুষজন নিজ নিজ কাজে বের হয়ে পড়ছে। এই শীত সকালের অনুভুতি ছিল আমার জীবনের অনন্য। আমি তা কখনোই ভুলব না। এই স্মৃতি আমার জীবনে চিরসবুজ হয়ে থাকবে।

অনুচ্ছেদ “পহেলা বৈশাখ”
Previus
ভাবসম্প্রসারণ “বলো মিথ্যা আপনার সুখ, মিথ্যা আপনার দুঃখ। স্বার্থমগ্ন যে জন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে, সে কখনো শেখেনি বাঁচিতে।”
Next

Share This Post


Suggestion or Complain

সংবাদ শিরোনাম